গান: লালন ফকির 
কন্ঠ: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
সঙ্গীত-আয়োজন: তাপস রায় 

চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে

Lyrics & Voice: Sudipto Chatterjee
Composition & Arrangement: Samrat Chakrabarti 

দুর্যোধন

এটি একটি শ্রুতি-নাটক| ৮০র দশকের প্রথম দিকে লিখেছিলাম| তখন কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে, ছাত্র-বন্ধুরা মিলে নানান কলেজ ফেস্টিভালে করা হতো নাটকটি| সেই সময় তাতে অভিনয় করতেন এমন কয়েকজন, যাঁদের অনেকেই এখন কলকাতার শিল্পী-সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত| ২০০২-এ আমরা পুনর্মিলিত হয়ে নাটকটি কলকাতার এক স্টুডিওতে বসে আবার রেকর্ড করি, পুরনো স্মৃতিকে উজ্জীবিত রাখতে| নাটকটি আজাবধি বানিজ্যিক ভাবে প্রকাশিত হয়নি| 

নাটকটি দশটি track-এ বিভক্ত| 

~ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় 

অভিনয়: শ্রীকান্ত আচার্য্য (অবিনাশ), খরাজ মুখোপাধ্যায় (পুলিশ অফিসার), চন্দন সেন (অরুণের বাবা), শান্তনু দাস (অরুণ) ও অন্যান্যরা 
সঙ্গীত: সম্রাট চক্রবর্তী 
নাটক, নির্দেশনা ও শব্দ-সম্পাদনা: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় 

মুখোমুখি Track 01

মুখোমুখি Track 09

মুখোমুখি Track 10

এইমাত্র স্টুডিও থেকে টাটকা গান নিয়ে ফিরলাম| ইশ! বাক্যটা লিখেই মনে হলো যেন বলছি, "বাজার থেকে ফিরলাম..." :-) কতকটা তাইই, তবে লালনের "কানার হাটবাজার" থেকে!! 
এই গানটি (আরও কয়েকটি সহ) গত ২৬শে নভেম্বর বার্লিনে রেকর্ড করা| সঙ্গে বাজিয়েছেন রশ্মি ভাট (তবলা/খোল), নুরুদ্দিন ফাতি (উদ) ও পিয়েত্রো সিল্ভেস্ত্রী (দোতারা)| কন্ঠ ও একতারা: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়| রেকর্ডিং ও মিক্সিং: মাথিয়াস মিল্হফ|


এসব দেখি কানার হাটবাজার

এই গানটিও বার্লিনের স্টুডিও রেকর্ডিং| তারিখ ২৬শে নভেম্বর ২০১১| অল্প-শোনা এই গানটিতে লালন শুধু মানব দেহের ভেতরে মক্কা কায়েম করছেন না, আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে এক বৈপ্লবিক উচ্চারণ করছেন একেবারে চার স্তবকের এই দীর্ঘ গানের শেষ পংক্তিতে গিয়ে, গানের একেবারে শেষ শব্দে! 

গানটি কুষ্টিয়ার বিখ্যাত গায়ক-ফকির মোকসেদ আলী শাহ-এর কন্ঠে শোনা| মোকসেদ আলী শাহ ছিলেন স্বনাম-ধন্যা লালন-গায়িকা, ফরিদা পারভীন-এর শিক্ষক ও লালনগীতির একজন সুর-সংশোধক| আজকে যে সুরে আমরা সাধারনত লালনের গান শুনি, তার অনেকগুলিই কুষ্টিয়ার প্রচলিত আঞ্চলিক ও মোকসেদ আলী শাহ-এর ভাষায় তাঁর "বাপ-দাদা-চাচা-মামার" কন্ঠে শোনা সুরের ওপর দাঁড় করিয়ে গেছেন তিনি| যেমন এই  দুর্লভ গানটি|  

আছে আদি মক্কা এই মানব দেহে

এই গানটি আমি প্রথম শুনি ২০০৮ সালে কুষ্টিয়ার বর্ষীয়ান ফকির মরহুম বাদের শাহ-এর কন্ঠে| সে সময় নাকি তাঁর বয়স ১০৭! বয়সের ভারে কম্পমান (অথচ আত্মিক শক্তিতে বলিষ্ঠ) স্বরে গানটা গেয়েই তিনি বললেন, "সাঁইজীর গান হইল হাদিসের মত| সাদা বাংলায় লেখা| যা খোঁজছেন, তার সব ওইখানেই পেইয়ে যাবেন|" 
শেষ জীবনে হতমান দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেও বাদের শাহ (ওরফে আব্দুল গনি শাহ) নিজের ভক্তিস্থল ও সাধনক্ষেত্র থেকে সরে যাননি| তিনি মারা যান ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারী মাসে, লালন শাহের মাজার থেকে অনতিদূরে একটি প্রায়-ভগ্নদশাপ্রাপ্ত একচালা ঘরে| আজ যদিও তাঁর কবরস্থানের ওপর পাকা সিমেন্টের সুচারু আচ্ছাদন|
২৬শে নভেম্বর ২০১১, বার্লিনে রেকর্ড করা গানগুলি মধ্যে, বলা বাহুল্য, এটিও একটি.... 


মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

লালনের এই গানটিতে উল্লেখযোগ্য হলো Magistrate শব্দের বঙ্গীকৃত প্রয়োগ| এই ধরনের বহু শব্দের প্রয়োগে লালন একাধিকবার সমসময়ের ব্রিটিশ-শাসিত গ্রাম-বাংলার পটভূমিকে অর্থময় ইঙ্গিতে বিধৃত করেছেন তাঁর গানে| লালনের গানের এই ঐতিহাসিক ও সমাজতাত্ত্বিক (তথা রাজনৈতিক) এই দিকটি আরও গভীর মূল্যায়নের দাবী রাখে| 

আগের গানগুলির মত, এটিও ২৬শে নভেম্বর ২০১১তে বার্লিনের এক স্টুডিওতে রেকর্ড করা| কন্ঠ: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়| সঙ্গতে: নুরুদ্দিন ফাতি (উদ), রশ্মি ভাট (তবলা/খোল) ও পিয়েত্র সিল্ভেস্ত্রি (দোতারা)| রেকর্ডিং ও মিক্সিং: মাথিয়াস মিল্হফ|



সাঁইর লীলা বুঝবি ক্ষ্যাপা কেমন করে

এটি লালন সাঁইজীর বহুল প্রচলিত একটি দৈন্য গান| অনেকেই গেয়েছেন এর আগে| আমারও খুব প্রিয় গান| অসাধারণ কাব্যগুণ, উপমার ব্যবহারও অনন্য-সাধারণ! তাই বার্লিনের রেকর্ডিং-এ অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম| 

সঙ্গতে রশ্মি ভাট (তবলা/খোল), নুরুদ্দিন ফাতি (উদ) ও পিয়েত্র সিল্ভেস্ত্রি (দোতারা)| রেকর্ডিং ও মিক্সিং: মাথিয়াস মিল্হফ| ২৬শে নভেম্বর ২০১১, বার্লিন|

সময় গেলে সাধন হবে না

এটি গুরুবাদী তত্ত্ব-গান| এই গানে লালন আল্লাহ ও নবীর একাত্মপরিচয়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন| সঙ্গে সঙ্গে এও বলেছেন যে যিনি তাঁর মুরশিদ, তিনিই তাঁর রাসুল| এ তিনের মধ্যে কোনো ভেদ নেই, এও আরেক অর্থে তিনেরই সাধন| এ কথা নাকি লালন বলছেন না, বলেছে কোরানে, যার ৩০ পারা জাহের বা প্রকাশিত, কিন্তু বাকি ১০ পারা হলো বাতেন ও গোপন, যার আরেক নাম "দেল-কোরান"| আর নবীজীর এ রূপকাষ্ঠের নাও তো এই মানব দেহ-তরণী....

পারে কে যাবি

লালনের অতি বিখ্যাত গান, অতএব অধিক বর্ণনায় কাজ নেই| 

খাঁচার ভিতর অচিন পাখি

বার্লিনে রেকর্ড করা গানগুলির শেষ গান হিসেবে লালন সাঁইজীর এই অসামান্য গানটি দেওয়া গেলো। সত্তর দশকে পশ্চিম বাংলায় নির্মলেন্দু চৌধুরী তাঁর আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে গানটি এক রকম ভাবে পরিবেশন করেছিলেন। সেই সুরই বোধকরি দুই বাংলার নাগরিক বাঙালির শ্রবণ-স্মৃতিতে মিশে রয়েছে। অথচ কুষ্টিয়া-যশোরের ফকিররা ভিন্ন সুরে গানটি গেয়ে থাকেন। আমি চেষ্টা করেছি সেই আঞ্চলিক সুর ও মেজাজটিকে ধরার। 

গানের শেষ দিকে আমার সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন মরক্কোর শিল্পী নুরুদ্দিন ফাতি। প্রায় একই সুরে তিনি বাংলা ও তাঁর দেশের মধ্যে সেতু গড়ে দিয়ে গেয়েছেন, 

"আমায় যদি ভালোবাসো তুমি, আমিও বাসবো তোমায়;
আমাকে যদি শ্রদ্ধা করো, আমিও শ্রদ্ধা করবো তোমায়;
সম্মান করো যদি, আমিও সালাম দেবো তোমার পায়।"

কে কথা কয়রে দেখা দেয় না

লালনের গৌরাঙ্গ-ভাবের গান, কিন্তু গানের বিষয় শ্রী রাধিকা। 

রেকর্ডিং: ২৯শে মার্চ ২০১৩
স্থান: Weavers Studio, কলকাতা 
কন্ঠ: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় 
যন্ত্র-সঙ্গীত: সাত্যকি বন্দ্যোপাধ্যায় (দোতারা) ও অরুণাভ গুপ্ত (ঢোল)

Bolo swarUp

লালনের ধাঁধা-গান!
২৯শে মার্চ, ২০১৩
স্থান: Weavers Studio, কলকাতা 
শিল্পী: সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়, নজরুল শাহ, সাত্যকি বন্দ্যোপাধ্যায় (দোতারা ও কন্ঠ), অরুণাভ গুপ্ত (ঢোল)

Sudipto

Popular tracks